গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এবং সমাজতান্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক বাসদ নেতা সেলিম মাহমুদকে ১৫ এপ্রিল ২০২৫, দিবাগত রাত ১ টা ৩০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় তার নিজ বাসা থেকে যৌথবাহিনী পরিচয়ে রুপগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। তাঁকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১২ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
শ্রমিকনেতা সেলিম মাহমুদের মুক্তির দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট সাভার উপজেলা শাখার আয়োজনে শুক্রবার সকাল ১১টায় সাভার রানাপ্লাজা প্রাঙ্গনে মানববন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাদস সাভার পৌর আহবায়ক আবু বকর সিদ্দিক লাভলুর সভাপতিত্বে ও শুভ আচায্যের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা আনোয়ার সিকদার, ছাত্রনেতা তানজিল, শ্রমিক নেতা আহমেদ জীবন প্রমূখ। মানববন্ধন সমাবেশে বক্তারা বলেন, রুপগঞ্জ থানার ভুলতা এলাকায় অবস্থিত রবিনটেক্স লিঃ গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা ইউনিয়ন গঠন ও নিবন্ধন আবেদনের পর থেকেই মালিক কর্তৃপক্ষ ইউনিয়নকে দূর্বল ও নির্মুল করতে বিভিন্ন ভাবে ইউনিয়ন সদস্যদের হয়রানি ও চাকরিচ্যূত করে আসছিল। শ্রমিক ইউনিয়ন নির্মুল করার এই ষড়যন্ত্র থেকেই রবিনটেক্স কারখানা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত শ্রমিকদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সংঘাতে ঠেলে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, পুলিশি হয়রানি আর চাকরিচ্যূত করে আতংক সৃষ্টির মাধ্যমে শ্রমিক ইউনিয়নে ও আন্দোলনকে দমন করার পথে হাঁটে। রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ২২ জন শ্রমিককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের অনেককে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রবিনটেক্সের শ্রমিকদের উপর চলমান এই নিপীড়নের প্রতিবাদ করা এবং তাদের আইনি সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করাই সেলিম মাহমুদের অপরাধ বলে ধারণা করছি, কারণ তার নামে পূর্বের কোন অভিযোগ নেই। নিপীড়িত শ্রমিকদের পাশে থাকার অপরাধে গভীর রাতে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার মত ন্যাক্কারজনক কাজের নিন্দা এবং অবিলম্বে সেলিম মাহমুদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানাচ্ছি। সেলিম মাহমুদকে হয়রানি করার এই প্রচেষ্টা, নিশ্চিত ভাবেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বাধীন ভাবে সংগঠন করায় অধিকারের উপর আক্রমণ বলে বিবেচিত হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারহরণ করতে রাষ্ট্র শক্তিকে ব্যবহার করার মালিকদের পুরোনো অপকৌশলের ফাঁদে বর্তমান প্রশাসন পাঁ দেবেনা বলে প্রত্যাশা করছি। অবিলম্বে শ্রমিকনেতা সেলিম মাহমুদসহ ২২জন শ্রমিকের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি পুণঃব্যক্ত করে জানাতে চাই যে গ্রেপ্তার, নির্যাতন করে কিংবা ভয় দেখিয়ে শ্রমিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট বা সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের প্রতিবাদের কন্ঠকে রোধ করা যাবে না।n