1. gonomanusherkatha.bd@gmail.com : গণমানুষের কথা : গণমানুষের কথা
  2. info@www.gonomanusherkatha.online : গণমানুষের কথা :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

সাভারে চাঁদা না পেয়ে মার্কেট কর্মচারী আব্দুর রহিমকে যুবলীগ নেতা বানানোর অপচেষ্টা, ষড়যন্ত্র ফাঁস

রতন হোসেন মোতালেব
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

ঢাকার সাভারে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেট কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা মত চাঁদা না পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী মো. আব্দুর রহিমকে কখনো যুবলীগ, কখনো স্বেচ্ছাসেবক লীগ আবার কখনো বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতা বানিয়ে অপপ্রচার ও বিভিন্ন থানায় মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। 

শুধু তাই নয় সন্ত্রাসী এই গোষ্ঠীটি কৌশল হিসেবে এডিটিং এর মাধ্যমে ফটো কার্ড তৈরি করে সাংবাদিকদের সরবরাহ করে ভুয়া তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করিয়েছে। এ নিয়ে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য যাচাই-বাছাই না করে তা প্রকাশ করায় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

গত ১৫ জানুয়ারি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট এর নোয়াখালী প্রতিনিধির পাঠানো ‘খোলস পাল্টে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বনে গেলেন শ্রমিকদল নেতা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে একই লেখা এবং ছবি কপি করে আরো তিনটি অনলাইন মিডিয়ায় তা প্রকাশ করে এডিটিং ফটো কাট বানিয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার করা হয়।

ভুয়া এই সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেটের ইনচার্জ আব্দুর রহিম। এদিকে বিএনপির একাধিক নেতাও এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অসত্য সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, আব্দুর রহিম চাকুরীর পাশাপাশি দীর্ঘ দের যুগ ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন। তিনি ২০১১ সালে সাভার পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড যুবদলের প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সুনামের সাথে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৮ সালে সাভার পৌর শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে এখন পর্যন্ত একই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আমলে বিএনপি করার দায়ে একাধিক মামলা, জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আব্দুর রহিম। ২০১৮ সালের পাতানো নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অফিস পোড়ানোর দুই মামলায় ৩৬ এবং ৮৪ নং এজাহার ভুক্ত আসামি হন। পরবর্তীতে সেই মামলায় তাকে দীর্ঘ সময় ধরে জেলহাজতে থাকতে হয়। একই মামলায় আসামী হয়েছেন সাভার বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।

 

এছাড়া ২০১৯ সাল, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে তিন দফায় সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেট দখলের পায়তারা করে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগ, এ সময় সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শীর্ষ সন্ত্রাসী মঞ্জুরুল আলম রাজীবের নির্দেশে আব্দুর রহিমসহ মার্কেটের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর বর্বর হামলা করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কর্মীরা। ফ্যাসিস্ট আমলেও সাধ্যমত সততার সাথে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন আব্দুর রহিম। জাতীয় পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় আওয়ামী লীগের বর্বররচিত হামলা ও নির্যাতনের তখনকার সংবাদ দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে। সাভারের স্থানীয় সাংবাদিকরা এর প্রত্যক্ষ সাক্ষী।

এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের পানি ও কেক দেওয়ায় আন্দোলনের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আব্দুর রহিমকে আন্দোলন চলাকালীন ২৮ জুলাই সকাল ১১ টা থেকে ২৯ জুলাই রাত সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা জেলার তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফির নির্দেশে তার রুমে আটকে রেখে লাঞ্ছিত ও বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করা হয়। পরবর্তীতে অর্থের বিনিময়ে পরিবারের জিম্মায় আব্দুর রহিমকে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

এক প্রতিবাদ লিপিতে আব্দুর রহিম বলেছেন, আমাকে জড়িয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি কোনদিন আওয়ামী লীগ কিংবা এর কোন অঙ্গ সংগঠনের কর্মী ছিলাম না। আমি এই নিউজের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আমলে আমাদের যেভাবে নির্যাতন এবং জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সম্পদের দিকে নজর দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা ঠিক ৫ আগস্টের পর নতুন একশ্রেণীর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার চেষ্টা করেছে। মূলত আমরা তাদের দাবি কৃত চাঁদা না দেওয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিভিন্ন থানায় হয়রানি মূলক মামলায় নাম লেখাচ্ছে। এতে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শুধু আমি নয় একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মহাসচিব মো. আইয়ুব আলী হাওলাদারের বিরুদ্ধেও গুলি করে ছাত্র হত্যা চেষ্টার মামলায় নাম ঢুকিয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে, জন্ম দিয়েছে নানা সমালোচনার। এ নিয়ে আমরা জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, মাননীয় পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), মাননীয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) , মাননীয় উপ-পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ঢাকা রেঞ্জ, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পত্র দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের আবেদন জানানো হয়েছে। এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাব, সাভার প্রেসক্লাব, আশুলিয়া প্রেসক্লাব ও স্থানীয় সাংবাদিকদের তা অনুসন্ধানের অনুরোধ জানানো হয়েছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রকারীরা কিছুদিন আগে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা মার্কেটের সাইনবোর্ডে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ব্যানার ও স্লোগান লিখে মার্কেট কর্তৃপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। পরবর্তীতে সাভার মডেল থানায় এ নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করার পর তদন্ত শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে এখন পর্যন্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির কয়েকজনের নাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যে ছবি ও ফটো কার্ডের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ এডিট করা ও ভুয়া। উক্ত সংবাদে জমিজমা সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধের জেরে আমার জন্মস্থান নোয়াখালীর প্রতিপক্ষ দুইজন রবিউল ইসলাম ও জিয়ার বক্তব্যের ভিত্তিতে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আমার কর্মস্থল সাভার এবং নোয়াখালী এলাকার নিরপেক্ষ মানুষের সঙ্গে কথা বললেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যেতো।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহবুব আলমগীর আলোর সঙ্গে আব্দুর রহিমের ছবি ভাইরাল হয়। কথাটি সঠিক নয়, রাজনীতিবিদ মাহবুব আলমগীর আলো ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে আমার সঙ্গে একাধিক ছবি জুলাই বিপ্লবের পূর্বেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া ছিল। মূলত মাহবুব আলমগীর আলো ভাই আমার আত্মীয়, তিনি নিজে এবং আমি প্রতিবেদককে বিষয়টি পরিষ্কার করার পরেও একপাক্ষিক ভাবে আমি নোয়াখালীর স্থানীয় রাজনীতিতে যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেদনে আমি এবং বিএনপি’র বিরুদ্ধে রং মেশানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে।

তাছাড়া প্রকাশিত নিউজের মধ্যে শ্রমিক দলের বিপরীত ব্যানারে যে ছবি ফটো কার্ডটি ব্যানার হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে সেটি আমার নয়, ভালোভাবে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে ব্যানারটি সুপার এডিট করা। একটি পক্ষ নিজেরাই এমন ভুয়া ছবি এডিট করে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়াচ্ছে। এছাড়া জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার বার্ষিক প্রোগ্রামে সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে আসেন, সেই প্রোগ্রামের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শ পরিবর্তন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি। জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার প্রত্যাশা আগামীতেও দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা আসবেন। মিথ্যা সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় আমি এতে সামাজিক, মানষিক ও দাফতরিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনলাইন পত্রিকাটিসহ পরবর্তীতে কপি-পেস্ট করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিষয়টি আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করা উচিত ছিলো বলে আমি মনে করছি।

তিনি জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থায় চাকুরীর পাশাপাশি জাতীয়তাবাদী সাভার পৌরসভা শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। গত ১৫ এপ্রিল অনলাইন পত্রিকা ঢাকা পোস্টসহ কাট-কপি পেস্ট করা অন্য প্রতিষ্ঠানে প্রকাশিত সংবাদে আমাকে যুবলীগ কর্মী বানানোর ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছে।

আব্দুর রহিমের নামে প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী প্রতিপক্ষের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এহেন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। তিনি, তার পছন্দের রাজনৈতিক মতাদর্শ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এবং তার কর্মরত প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আব্দুর রহিম সশরীরে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিতে রাজি আছেন। তিনি বলেন, তারা সুপরিচিত ও স্বনামধন্য অরাজনৈতিক এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় অসত্য মিথ্যা ঘটনা সমর্থন করতে পারেন না বিদায় উল্লেখিত প্রতিবেদনটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট
error: Content is protected !!